সাতক্ষীরা প্রধানত চিংড়ির জন্য বিখ্যাত। এখানের চিংড়ি পৃথিবীর অনেক জায়গায় রপ্তানি করা হয়ে থাকে। সাতক্ষীরার সন্দেশ অনেক নামকরা। এছারা সাতক্ষীরা আম এবং মাছের জন্য বিখ্যাত। সাতক্ষীরার মাছ ও আম বাংলাদেশের অনেক জেলায় পউছে দেওয়া হয়। সাতক্ষীরা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্তপুরন অবদান রাখছে।অনেক বইদেশিক মুদ্রা অরজন করে জেলাটি অনেক অবদান রেখে চলেছে।
সাতক্ষীরা জেলা শিল্প-বানিজ্যে |
|
| ||||||||
সাতক্ষীরা জেলা শিল্প-বানিজ্যে বিশেষ উন্নত নয় ।প্রাচীন কাল থেকে লবণ শিল্পের সম্ভাবনা যথেষ্ট থাকলেও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সাথে ব্যবসায় সম্পর্ক গড়ে ওঠার আগে এ শিল্পের অগ্রগতি তো দূরের কথা কোনো পরিকল্পিত প্রয়াসই গৃহীত হয়নি বলে বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন ।ব্রিটিশ পূর্ব যুগে জেলার সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে যে গ্রামীণসমাজ গড়ে উঠেছিল- তাতে কুটির শিল্পীরা বিক্ষিপ্ত,বিচ্ছিন্ন ও অপরিকল্পিতভাবে পণ্যদ্রব্য তৈরি করতো । |
| |||||||||
সাতক্ষীরা বনজসম্পদ সমৃদ্ধ কৃষিপ্রধান এলাকা; মূলত ব্রিটিশযুগ থেকেই উপঢৌকন হিসেবে চব্বিশ পরগণা লাভের পর ব্রিটিশ বেনেরা নিজ স্বার্থেই সুন্দরবনের উন্নয়ন ও এতদাঞ্চলের অর্থনীতিতে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে ।দেখা যায়, অচিরেই নানাবিধ কৃষিপন্য, গৃহপালিতপশু, লবনাক্ত ও মিষ্টি পানির মাছ এবং সুন্দরবনের কাঠ, মধু ও পশুর চামড়া সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকার তথা সাতক্ষীরার অর্থনীতির ভিত্তি হয়ে ওঠে ।ব্রিটিশ শাসনের অব্যবহিত পূর্ব যুগে অবশ্য অবিভক্ত বাংলার উপকূলীয় জেলাগুলোতে লবণশিল্প গড়ে ওঠার সংবাদ পাওয়া যায় । |
| |||||||||
কুটির শিল্পের মধ্যে তাঁত শিল্প, গুড়, চিনি, বাঁশ, বেঁত, স্বর্ণালংকার, মত্স্য শিকার ও পশু-পালন প্রভৃতি সুন্দরবন অঞ্চলের অর্থনৈতিক ভিত্তির সম্ভাবনা রুপে দেখা দেয় ।আর ব্রিটিশ যুগ থেকেই তা কার্যকরীরূপ লাভ করতে থাকে । | ||||||||||
সাতক্ষীরা তথা বৃহত্তর সুন্দরবনাঞ্চলের শিল্প-বাণিজ্য সম্পর্কে বিভিন্ন ঐতিহাসিক ও গবেষকগণ উল্লেখিত কয়েকটা বিষয় সর্ম্পকে এখানে আলোকপাত করা যাচ্ছে । | ||||||||||
তাঁত |
|
| ||||||||
অতীতকালে বিশেষত মোগল যুগে বাংলাদেশেরতাঁতশিল্প ছিলো সমৃদ্ধ । বাংলাদেশের মসলিন বস্ত্র সে যুগে আন্তর্জাতিক খ্যাতি লাভ করে ।সাতক্ষীরার বিভিন্ন অঞ্চলেও উন্নতমানের তাঁতের কাপড় তৈরি হতো ।হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে তাঁতীছিলো ।ব্রিটিশ আমলে কলারোয়া থানার সোনাবাড়িয়া গ্রামে ইংরেজ কোম্পনি কারখানা স্থাপন করে ।কোম্পানির কর্মচারীরা স্থানীয় তাঁতীদেরকে দাদন দিয়ে কারখানায় কাপড় প্রস্তুত করিয়ে কলকাতায় চালান দিতো।বাকশা (বর্তমানে ব্রজবাকশা) গ্রামের তাঁতীরা ঢাকাই মসলিনের অনুকরণে বস্ত্র প্রস্তুতকরণে পারদর্শী হয়ে ওঠে, যার সুনাম দেশে বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে ।এক সময়ে তাঁতশিল্প সমগ্র বাংলাদেশের মতো সাতক্ষীরা অঞ্চলের বহু মানুষের জীবন-জীবিকার অন্যতম অবলম্বন হয়েছিলো ।কিন্তুসাধারণ তাঁতীদের অবস্থাধীরে ধীরে অত্যন্তকরুণ হয়ে ওঠে ।বুকানিন হ্যামিলটন ঊনিশশতকের শুরুতে তাঁতিদের জীবন-যাত্রা ও আর্থিক ভিত্তি পর্যবেক্ষণ করে মন্তব্য করেছিলেন যে, নানা রকমের ঘুষ ওব্যবসায়ীদের তুষ্ট করে প্রকৃত উত্পাদকদের হাতে যে অর্থ পৌঁছুতো তাতে তারা জীবন ধারণের সামান্য প্রয়োজনটুকু মেটাতে পারলেও উদ্বৃত্ত সম্পদ কিছু থাকতোনা ।জমিদারের ক্রমান্বয়ে বাড়িয়ে যাওয়া খাজনা, মহাজনের সুদের হার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি- সব কিছু মিটিয়ে খুব সামান্যই উত্পাদকের হাতে পৌঁছুতো । |
| |||||||||
এর ফলে কার্পাস উত্পাদন কমে যেতে থাকে ।তাঁতিরা অনেকে জীবনধারণের তাগিদে ভিন্ন পেশায় জড়িয়ে পড়ে ।আর এরই পাশাপাশি ইংল্যান্ডের শিল্প বিপ্লবের ফলে বিদেশি কাপড়ের প্রাদুর্ভাবে সাতক্ষীরাঞ্চলে তাঁত শিল্পের এক প্রকার বিলোপই ঘটে । |
| |||||||||
লবণ |
|
| ||||||||
সুপ্রাচীনকাল থেকে বাংলার সমুদ্রতীরের জেলাগুলিতে লবণ উত্পাদিত হতো প্রাচীন ভূমিদানপত্রে ‘সলবণভূমির’ উল্লেখ রয়েছে ।কাশ্মীরি বণিকরা বাংলা থেকে প্রতি বছর প্রচুর লবণ কাশীতে যেতো এবং সেখান থেকে অযোধ্যা, বুন্দেলখন্ডওনেপালে চালান করা হতো ।১৭৫৭-৫৮ সালে বাংলাদেশে ৮৫০০০ টন থেকে ৯৫০০০টন লবণ তৈরি হয়েছিল।১৭৬০ এ ২৪ পরগণার লবণের সমগ্র বাণিজ্য কোম্পানির হস্তগত হয় এবং ১৭৬৫ সালেমধ্যে চট্টগ্রাম, বর্ধমান, মেদিনীপুর এর বাণিজ্য কোম্পনির হাতে চলে আসায় আমাদের দেশের বণিকরা সে যুগের বাণিজ্যের এক উল্লেখযোগ্য ক্ষেত্র হতে বিদায় নিতে বাধ্য হয় ।সমগ্র বাংলার লবণ উত্পাদনের অর্ধেক তমলুক হিজলীতে উত্পাদিত হতো আর তিনভাগের একভাগ উত্পাদিত হতো সুন্দরবনের অভ্যন্তরে বারুইপুরও বশিরহাটের রায়মঙ্গল মহলগুলোতে ।সমগ্র অষ্টাদশ শতাব্দী জুড়ে রায়মঙ্গল সল্ট এজেন্সি ছিলো নদীয়া জেলার অন্তর্গত । |
| |||||||||
|
|
|
| |||||||
উল্লেখ্য যে, এ সময় খুলনা জেলা সৃষ্টি হয়নি ।ফলে, সুন্দরবনাঞ্চলের সাতক্ষীরা অঞ্চল তখন নদীয়ার (ভারত) অন্তর্ভুক্ত থাকায় রায়মঙ্গল সল্ট এজেন্সিও নদীয়ার আওতায় পরিচালিত হতো ।সুন্দরবন সল্ট এজেন্সি পরিচালিত হতো মলঙ্গীদের তত্ত্বাবধানে ।প্রান্তিক লবণ শ্রমিকরা মলঙ্গীদের দ্বারা নানাভাবে শোষিত হতো ।২৪ পরগণা জেলা উপঢৌকন লাভের পর রায়মঙ্গল সল্ট এজেন্সি কোম্পানির নজরে আসায় এবার শোষণের খড়গটা নেমে আসে ঠিকে মলঙ্গীদের ওপর ।প্রান্তিক ক্রমিক ও মলঙ্গীরা ঘুষ, ওজন-ফাঁকি, দাদন প্রভৃতি নানাবিধ চক্রান্তের শিকার হয়ে চরম অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে ।তদুপরি রায়মঙ্গল এজেন্সি সুন্দরবনের দুর্গম এলাকায় অবস্থানের কারণে শ্রমিকরা সেখানে কাজ করতে অস্বীকার করতে থাকে।এমতাবস্থায় ঠিক মলঙ্গী ও মাহিন্দার বা প্রান্তিক শ্রমিকরা কোম্পানির দাদন গ্রহণ করে কাজ করতে অস্বীকার করে ।তাছাড়া শ্রমিকরা অগ্রিম দাদন গ্রহণ করলে -কায়িক পরিশ্রমের মাধ্যমে তাদের ঋণ আর কখনো শোধ হবার সম্ভাবনা থাকতোনা ।কোম্পানির নিযুক্ত মলঙ্গীরা জোর -জবরদস্তীকরে শ্রমিকদেরকে দাদন গ্রহণ করতে বাধ্য করতে থাকায় অনেকেই গোপনে এলাকা ত্যাগ করতে বাধ্য হয় ।যশোরের কলারোয়া (বর্তমানে সাতক্ষীরারএকটা উপজেলা) ও বাকলার (বরিশাল) একুশটা গ্রামের কমপক্ষে ১৫০জন চাষীকে জোর করে লবণের কাজে লাগানোর অভিযোগ পাওয়া যায়। | ||||||||||
আরো জানা যায়, তত্কালীন বুড়ন পরগণায়(বর্তমান সাতক্ষীরা জেলা) অনেকগুলো ছোটোখাটো লবণ উত্পাদন ক্ষেত্র ছিলো ।সেখানকার কৃষকদের অনেককে জোর করে লবণ উত্পাদনে বাধ্য করায় এ সময় ধান চাষের ওপর গুরুতর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।উপর্যুপরি অভিযোগের মুখে ১৭৮৮ খ্রিস্টাব্দে সরকার কর্তৃক দাদন প্রথা বা অন্যান্য উপায়ে শ্রমিকদের লবণ উত্পাদণে জোরপূর্বক বাধ্য করা নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়।অবশ্য চুরি করে অনেকে লবণ তৈরি করতো।সেআইনঅনুযায়ী লবণ উত্পাদন ও সকল প্রকার অনিয়ম রোধের নিমিত্তে লবণ দারোগা নিয়োগ করা হতো । সাতক্ষীরা সংলগ্ন সুন্দরবন এলাকায় বাঁশতলা (বর্তমানে কালিগঞ্জ উপজেলায়) ও আশাশুনি (উপজেলা) তে দুটো চৌকি ছিলো, যেখান থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকার দারোগারা বেআইনী লবণ উত্পাদন, বিক্রয়, দাদন প্রভৃতি বিষয়ে তদারকি করতো । পরবর্তী কালে বাখরগঞ্জ (বরিশাল), চট্টগ্রাম প্রভৃতি স্থানে লবণ উত্পাদন কেন্দ্র স্থাপিত হয় ।অন্যদিকে ইংল্যান্ডের কলে প্রস্তুত সস্তালবণ আমদানিতে ধীরে ধীরে সুন্দরবন এলাকার লবণ শিল্প বন্ধ হয়ে যায় । |
| |||||||||
|
|
|
| |||||||
উল্লেখ্য যে, স্বাধীনতা উত্তরকালে ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন সাতক্ষীরার বিনেরপোতায় ১৫ একর ৭৫ শতক জমিতে বিসিক শিল্পনগরী গড়ে তুলেছে ।বিসিকের পক্ষ থেকে বিভিন্ন শিল্পে ঋণ দানের যে ব্যবস্থারয়েছে তারই আওতায় শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী ও যতীন্দ্রনগরে তিনটে লবণ উত্পাদন কেন্দ্র স্থাপণ করায় পর্যাপ্ত পরিমাণে লবণের চাহিদা পূরণ হচ্ছে। |
| |||||||||
চিনি ও গুড় |
|
| ||||||||
ব্রিটিশ শাসনামলে বৃহত্তর সুন্দরবন এলাকায় চিনি ও গুড় শিল্প গড়ে ওঠে ।এই শিল্পের কাঁচামাল সংগৃহীত হতো - আঁখ ও খেজুরের রস হতে ।উনিশ শতকের গোড়ার দিকে এই এলাকায় কৃষকরা এই শিল্পের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে জীবিকা উপার্জনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে গ্রহণ করে ।কিন্তুছিয়াত্তরের মন্বন্তরের ফলে ব্যাপক খাদ্য ঘাটতি দেখা দিলে আঁখ চাষ উল্লেখযোগ্য হারে কমে যায় ।কেননা চাষীরা বিশেষভাবে ধান চাষের দিকে ঝুঁকে পড়ে, পাশাপাশি উপার্জনের অন্যতম উত্স হিসেবে চিনি ও গুড় উত্পাদনের প্রতি গুরুত্ব প্রদান করতে থাকে।উনিশ শতকের শেষ দশক পর্যন্তএই শিল্পের যথেষ্ট উন্নতি সাধিত হয় । এ সময়ে কয়েকজন ইংরেজ বিদেশি কায়দায়বৃহত্তর চিনির কারখানা নির্মাণ করে ।যশোরের কোটচঁদপুরে ও চৌগাছায় চিনি কারখানা এবং তাহিরপুরে চিনি হতে মদ তৈরির কারখানা নির্মিত হয় ।কিন্তুবিদেশিরা প্রকৃতপক্ষে এই শিল্পে সুবিধে করতে না পারায় কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে যায়।অবশ্য দেশি শিল্পীরা ছোটো ছোটো কারখানার মাধ্যমে চিনি শিল্পের বেশ অগ্রগতি সাধনকরে ও শিল্পীরা নিয়ন্ত্রকহিসেবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করতে সমর্থ হয় । |
| |||||||||
|
|
|
| |||||||
যশোর,খুলনা,চব্বিশ পরগণা,বাখরগঞ্জসহ অন্যান্য জেলায় শীতকালে খেজুর গাছ থেকে রস বের করার পদ্ধতি প্রাচীনকাল থেকে প্রচলিত ছিল ।প্রতিটি গ্রামে গাছ থেকে রস বের করার কাজে শিউলিরা নিয়োজিত থাকতো ।কার্তিক মাসের দিকে খেজুর গাছের এক পাশের পাতা ছেটে গাছ পরিস্কার করে অগ্রহায়ণ মাস থেকে রস বের করে সেই রস জ্বাল দিয়ে গুড় করার পদ্ধতি কৃষক পরিবার জানতো ।গুড় জ্বাল দেবার জালা ও মাটির ভাড় তৈরিতে এলাকার কুমাররা পটু ছিল ।বিভিন্ন গ্রামের কুমাররা শীতকালে গৃহস্থদের রস জ্বালিয়ে গুড় করার জন্য বিভিন্ন ধরনের মাটির পাত্র সরবরাহ করত ।গ্রামে-গঞ্জে অসংখ্য কারখানা গড়ে উঠেছিল ।কোটচাঁদপুর, কেশবপুর,চান্দুড়িয়া, চৌগাছা (বৃহত্তর যশোর), গোবরডাঙ্গা, বাদুড়িয়া, বসিরহাট, টাকী (চব্বিশ পরগণা,ভারত) খুলনা জেলার (বর্তমানে সাতক্ষীরা) দেবহাটা,কুশলিয়া,বড়দল,নবেকি,বাগেরহাট (বৃহত্তর খুলনা জেলা-বর্তমানে জেলা), পটুয়াখালি(বৃহত্তর বাখরগঞ্জ), বরিশাল(বর্তমানে জেলা) গুড়ের গঞ্জ হিসেবে প্রাধান্য পেয়েছিল ।বড় বড় চিনির কারখানাগুলি তাদের এজেন্ট বা ব্যাপারির মারফত বিভিন্ন হাট থেকে গুড় কিনত সরাসরি উত্পাদকদের কাছ থেকে ।খুলনার বড়দলও নবেকি সে যুগে গুড়ের হাট হিসেবে বিশেষ খ্যাতি লাভ করেছিল। |
| |||||||||
গবেষক শশাঙ্ক মন্ডলের মতে,বিশ শতকের দ্বিতীয় দশক পর্যন্তসাতক্ষীরার কালিগঞ্জ (বর্তমানে উপজেলা) থানার কুশলিয়া হাট গুড়ের জন্য বিখ্যাত হাট হিসেবে স্বীকৃতি ও খ্যাতি লাভ করেছিলো । | ||||||||||
বিশিষ্ট ঐতিহাসিক ও খুলনা গেজেটিয়ার (১৯২৭) প্রণেতা এস.এস. ও মালির গ্রন্থহতে বিশ শতকের সূচনা পর্বের এই এলাকার অর্থনীতির একটা সুন্দর চিত্র লক্ষ করা যায় : খুলনা জেলার জনগণ সার্বিকভাবে বেশ সমৃদ্ধ এবং তাদের অধিকাংশই ছিলো কৃষি পণ্যের উপর নির্ভরশীল ।জমি ও বাগানের উত্পাদিত পণ্য দ্বারা তাদের জীবনযাত্রা নির্বাহ হতো এবং উদ্বৃত্ত দ্রব্যাদি বিক্রয় করে তারা প্রয়োজনীয় ছোটোখাটো বিলাসসামগ্রী ক্রয় করতো, উর্বর জমিতে প্রচুর ফসল, বিশেষত অধিক পরিমাণে ধান উত্পাদিত হতো ।প্রায় প্রত্যেক গৃহস্থের বসতবাড়ি সংলগ্ন জমিতে নারকেল ও সুপারির বাগান ছিলো।সুতরাং উত্পাদিত ধান তার লভ্যাংশ হিসেবে বিবেচিত হতো এবং মৌসুম অনুকূল হলে সে বছর বেশ কিছু পরিমাণ অর্থ সঞ্চয় করতে পারতো ।নদী পথের সংখ্যাধিক্যও কৃষকদের সমৃদ্ধির অনুকূল ছিলো ।ধান,পাট,নারকেল প্রভৃতি যে কোন কৃষিপণ্য তারা সহজে এবং স্বল্প ব্যয়ে নৌকাযোগে বিক্রয় কেন্দ্রে কিংবা প্রয়োজনবোধে সরাসরি কলকাতায় পাঠাতো। |
| |||||||||
উল্লেখ করা যেতে পারে, সাতক্ষীরায় চিনি শিল্প বিলুপ্ত হলেও গুড় শিল্প এখনো তার ঐতিহ্যটুকু টিকিয়ে রেখে চলেছে, যদিও তা বহুলাংশে কমে এসেছে-বিশেষত খেজুরের গুড়শিল্প।তবে তা বর্তমানে শিল্প পর্যায়ে নেই ।তালা ও আশাশুনি উপজেলা আঁখ চাষের মাধ্যমে আঁখের গুড় উত্পাদন ও বিপণনে কৃতিত্বের পরিচয় দিচ্ছে । | ||||||||||
অন্যান্য কুটির শিল্প |
|
| ||||||||
উনিশ শতকের গোড়ায় রাজধানী কোলকাতা ও অন্যান্য জেলা শহরের দ্রুত উন্নতিসাধনঘটতে থাকায় এসব জায়গায় পাকা ইমারত নির্মাণের প্রয়োজন দেখা দিলে বঙ্গোপসাগরতীরবর্তী সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকায় জোংড়া (শামুক) সংগ্রহের মাধ্যমে চুন তৈরীর হিড়িক পড়ে যায় ।ফলে ডায়মন্ড হারবার (পশ্চিমবাংলা) ও খুলনা জেলায় (সাতক্ষীরাসহ) ছোটো ছোটো চুনের কারখানা গড়ে ওঠে ।নগরোন্নয়নেরকারণে জীবনযাত্রার মান,দৃষ্টিভঙ্গি ও রুচির পরিবর্তন ঘটতে থাকে ।খালি পায়ে হাঁটা ও কেঠো খড়ম ব্যবহারের পরিবর্তে জুতা পায়ে পরার প্রবণতাও গড়ে উঠতে থাকে।এ জন্যে গবাদিপশু পালন যেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তেমনি ছোটো ছোটো চামড়ার কারখানাও গড়ে উঠতে থাকে ।সুন্দরবনাঞ্চলের অনেক কৃষিজীবী জীবিকা পরিবর্তন করে চামড়ার কাজেও নিয়োজিত হয়।পশুর হাড়ের চিরুনি তৈরির উদ্যোগও গৃহীত হয় ।উনিশ শতকের শেষের দিকে বাঙালিদের উদ্যোগে যশোর বিখ্যাত হয়েওঠে ।সাতচল্লিশের দেশ বিভাগের দীর্ঘকাল পরেও প্লাস্টিক শিল্পের রমরমা ব্যবসায় গড়ে ওঠার আগে পর্যন্তযশোরের হাড়ের চিরুনির আভিজাত্য ও জনপ্রিয়তা অটুট ছিলো ।সাতক্ষীরা জেলা তথা সুন্দরবনাঞ্চলে মাদুর শিল্প একটা বিশিষ্ট স্থানের অধিকারী ।উনিশ শতকের শেষের দিক থেকে জেলার উত্তরাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে এক প্রকার দীর্ঘ ঘাস জাতীয় বস্তুথেকে মাদুর তৈরী হতে থাকে ।এই জাতীয় তৃণকে পাতি এবং বিশেষত সাতক্ষীরার আঞ্চলিক ভাষায় মেলেবলে ।এসব মাদুর তৈরীর ব্যবস্থাগৃহীত হলেও মেদিনীপুর থেকে সংগৃহীত পাতিতে সুবিধে করতে না পেরে মাদুর প্রস্তুতের |
| |||||||||
আশা ত্যাগ করে।তবে , সাতক্ষীরায়মেলে মাদুর তৈরিতেকম খরচ ও অবসর সময়ে প্রস্তুত করতেসুবিধে থাকায় মধ্য ও উত্তরাঞ্চলীয় কিছু কিছু গ্রামে কুটির শিল্প হিসেবে বিস্তৃতি ও জনপ্রিয়তা লাভ করে, যার ক্ষীণ ধারাটা অদ্যাবধি বিদ্যমান ।এছাড়া কর্মকার, কুম্ভকার, স্বর্ণকার, শিউলি প্রভৃতি কুটির শিল্পীরা ব্রিটিশ আমল থেকে তাদের পেশায় নিয়োজিত থেকে আঞ্চলিক চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বহির্বাণিজ্যের সাথে জড়িত হতে সক্ষম হয়েছে । | ||||||||||
অসংখ্য নদী-নালাবেষ্টিত অঞ্চল হওয়ায় যাতায়াত ও ব্যবসায় বাণিজ্য প্রভৃতি বিষয়ের জন্যে নৌকা তৈরি একসময় একটা গুরুত্বপূর্ণ স্থানদখল করে ।বর্তমানে অধিকাংশ নদীতে চর পড়ায় ও নাব্যতা হারানোয় এবং স্থলপথে যাতায়াতের প্রভূত উন্নতি ঘটায় এই নৌশিল্প এক প্রকার ধ্বংসের মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছে।জনসংখ্যা বৃদ্ধি, খাদ্য ঘাটতি ও পেশাগত প্রতিবন্ধকতার কারণে কুটির শিল্পিরা ধীরে ধীরে কতোটা অসহায় অবস্থায় পড়েছিলো নিম্নবক্তব্য থেকে সহজে অনুধাবন করা যাবে - 'সমগ্র ব্রিটিশ রাজত্ব জুড়ে ধীরে ধীরে প্রচলিত কুটির শিল্পগুলি ধ্বংস হয়ে গেল ।যা কিছু অবশিষ্ট ছিল তার শিল্পীরা চরম দারিদ্র্যের মধ্যে জীবন যাপন করতে লাগল ।সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে যে নৌশিল্প গড়ে উঠেছিল তা ধীরে ধীরে বন্ধ হবার উপক্রম হল ; গ্রামীণ অনেক মহিলা ঢেঁকিতে ধান থেকে চাল তৈরী করে অথবা কাঁথা সেলাই করে গৃহস্থঘরের বৌ-ঝিদের হাত থেকে কিছু কিছু উপার্জন করত তাও বন্ধ হয়ে গেল ।সুন্দরবনের বনজ শিল্পকে কেন্দ্র করে কোন শিল্প গড়ে তোলার প্রচেষ্টা লক্ষ্যকরা গেল না- সবমানুষই কৃষির উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ল ।সে যুগে জঘন্যতম সামন্ততান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে কৃষি অর্থনীতি আবর্তিত হত এবং তার ফলে সীমাহীন দারিদ্র্য ওঅনটনের মধ্য দিয়ে মানুষগুলি জীবনযাত্রা নির্বাহ করত ।
|
| |||||||||
ব্রিটিশ আমলে জেলার ব্যবসায়-বাণিজ্য ছিলো মূলত স্থানীয় হিন্দুদের নিয়ন্ত্রণে ।পাকিস্তান আমলে চলে যায় পাঞ্জাবি ও ইসলামিয়া সম্প্রদায়ের হাতে ।বেশ কিছু মারোয়াড়ি ব্যবসায়ীও ছিলো- বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর হতে তারা এদেশ ছেড়ে চলে যায়। |
| |||||||||
ব্রিটিশ আমল থেকে জেলার হাট বাজারগুলো ছিলো প্রধানত জমিদার ও অবস্থাপন্ন ব্যক্তিদের নিয়ন্ত্রণে ।তাদের নিজস্ব ইজারাদারদের দ্বারা এগুলো পরিচালিত হত ।বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর থেকে এসব সরকারি সম্পত্তিরুপে অধিগৃহীত হয় ।প্রতি বছর ডাকের মাধ্যমে সর্বোচ্চ নিলাম গ্রহণকারী ইজারা নিয়ে পরিচালনা করেন ।এসব ব্যবসায়ীদের দ্বারা কমিটি গঠনের মাধ্যমে হাট-বাজাররের শৃংখলা রক্ষিত হয়ে থাকে ।এসব হাট-বাজারই সাতক্ষীরা জেলার সর্বপ্রকার পণ্য ক্রয়-বিক্রয় কেন্দ্র । |
| |||||||||
জেলার প্রধান বানিজ্যকেন্দ্রগুলো হলো- বড়দল,পাটকেলঘাটা,পারুলিয়া,আখড়াখোলা,আবাদের হাট,নওয়াবেকি, ঝাউডাঙ্গা,বুধহাটা, কলারোয়া, বসন্তপুর,কালিগঞ্জ, নকিপুর,নাজিমগঞ্জ, ভেটখালি,হবিনগর, হোগলা, বুড়িগোয়ালিনী, বাঁশতলা ইত্যাদি | ||||||||||
এছাড়া কয়েকটি ফিস প্রসেসিং প্লান্ট, কোল্ড স্টোরেজ, আইস প্লান্ট, রাইস মিল, অটো রাইস মিল, ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস, বেকারী,ইট ভাটা,বাঁশ ও বেতের দ্রব্যাদি, আসবাবপত্র ও পূর্বে উল্লেখিত তাঁত,লবণ,গুড়,পাটজাত দ্রব্য ও মাছ প্রভৃতি বর্তমানে সাতক্ষীরা শিল্প বাণিজ্যে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছে। |
| |||||||||
|
|
|
| |||||||
চিংড়ি |
| |||||||||
| বাগদা ও গলদা চিংড়ি, পৃথিবীর বিখ্যাত এই চিংড়ি হোয়াইট গোল্ড নামে পরিচিত্ সাতক্ষীরাতে উৎপাদিতহয়। বাংলাদেশের মোট চিংড়ি রপ্তানির শতকরা ৭০ ভাগ সাতক্ষীরা থেকে ইউরোপসহবহি:বিশ্বে অন্যান্য দেশে এর বাজার। এই শিল্পকে ঘিরে বর্তমানে সাতক্ষীরাএক শ্রেণীর লোক বিত্তবান হযেছে। পক্ষান্তরে হত দরিদ্রমানুষের ভাগ্যেরপরিবর্তন হয়েছে সামান্যই।তবে চিংড়ি যেমন বিদেশে সমাদ্রিত হয় তেমনি দেশেওএর কদর আছে। |
| ||||||||
| চিংড়ি সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য |
| ||||||||
কাষ্টমস সার্কেল, ভোমরা (বর্তমান:- ভোমরা স্থল শুল্ক ষ্টেশন, ভোমরা, সাতক্ষীরা) |
| |||||||||
|
|
|
| |||||||
| সার্কেল সৃষ্টি | ০২/০৬/১৯৯০ ইং |
| |||||||
| আমদানী-রপ্তানী শুরু | ১৫/০৫/১৯৯৬ ইং |
| |||||||
| শুভ উদ্বোধন করেন | জনাব মো: সাখাওয়াত হোসেন, কমিশনার কাষ্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট , খুলনা। |
| |||||||
| মৌজা | লক্ষীদাঁড়ী এবং ভোমরা। |
| |||||||
| থানা ও জেলা | সাতক্ষীরা। |
| |||||||
| চৌহদ্দি | দক্ষিণ দিকে- অর্ধ (১/২) কিলোমিটার, উত্তর দিকে-অর্ধ (১/২) কিলোমিটার, পূর্ব দিকে- রাস্তা বরাবর ২ (দুই) কিলোমিটার এবং পশ্চিম দিকে- এক-চতুর্থাংশ (১/৪) কিলোমিটার। |
| |||||||
|
|
|
| |||||||
| আর্থিক বত্সর অনুযায়ী লক্ষ্য মাত্রা এবং অর্জন |
| ||||||||
| অর্থ বত্সর | লক্ষ্য মাত্রা | অর্জন | |||||||
| ১৯৯৫-৯৬ | - | ১,০৮,৮০,২৫৫/- | |||||||
| ১৯৯৬-৯৭ | - | ১,৯৪,৯৬,৬২৯/- | |||||||
| ১৯৯৭-৯৮ | ২,৬৪,২৭,০০০/- | ৯,৬৩,৬১,১৫৪/- | |||||||
| ১৯৯৮-৯৯ | ১১,৫৫,৫৩,০০০/- | ২,১৬,২৭,৬৮০/- | |||||||
| ১৯৯৯-২০০০ | ৫,০০,০০,০০০/- | ৪,২৯,২৩,৩৫৫/- | |||||||
| ২০০০-২০০১ | ৫,৫৫,০০,০০০/- | ৪,৪৬,৫৭,৮৯৯/- | |||||||
| ২০০১-২০০২ | ৫,০০,০০,০০০/- | ৪,৭২,২৭,৫৫৮/- | |||||||
| ২০০২-২০০৩ | ৫,১৭,০০,০০০/- | ১২,৬৬,১২,৩৮২/- | |||||||
| ২০০৩-২০০৪ | ১২,০০,০০,০০০/- | ৩৩,৯৫,৭৬,২৭৩/- | |||||||
| ২০০৪-২০০৫ | ৩৪,৭৯,০০,০০০/- | ৫৪,৭৮,৭৫,৩২৫/- | |||||||
| ২০০৫-২০০৬ | ৩৮,৮৪,০০,০০০/- | ৭৩,৫৫,৬৬,০৫৮/- | |||||||
| ২০০৬-২০০৭ | ৮৯,৪৪,০০,০০০/- | ৫৮,৮৪,০৩,৯৪৫/- | |||||||
| ২০০৭-২০০৮ | ১০১,২১,০০,০০০/- | ১২২,৭৬,৯০,২৭৫/- | |||||||
| ২০০৮-২০০৯ | ১৪৭,০০,০০,০০০/- | ৯৬,০৯,১৪,১৩৮/- | |||||||
|
|
|
| |||||||
| ভোমরা স্থল শুল্ক ষ্টেশন ভোমরা, সাতক্ষীরা |
| ||||||||
|
|
|
| |||||||
| ভোমরা কাষ্টমস অফিস। |
|
| |||||||
| ভোমরা কাষ্টমস সি এন্ড এফ এজেন্টস এসোসিয়েশন। |
| ||||||||
| ভোমরা সি এন্ড এফ এজেন্টস কর্মচারী এসোসিয়েশন। |
| ||||||||
| ভোমরা স্থল বন্দর হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়ন, রেজি: নং-১১৫৫। |
| ||||||||
| ভোমরা স্থল বন্দর গোডাউন হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়ন, রেজি: নং- ১১৫৯। |
| ||||||||
| ভোমরা ইউনিয়ন হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়ন, রেজি: নং- ১৭২২/০৩। |
| ||||||||
| ভোমরা বন্দর হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়ন, রেজি: নং- ১৯৬৪/০৯। |
| ||||||||
| ভোমরা স্থল বন্দর ট্রান্সপোর্ট মালিক সমবায় সমিতি লি: রেজি: নং- ৮৬/সাত।
|
| ||||||||
| ভোমরা স্থল বন্দর ট্রান্সপোর্ট মালিক বহুমুখী সমবায় সমিতি লি: রেজি: নং-৮৭/সাত। |
| ||||||||
| ভোমরা স্থল বন্দর বাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতি। |
| ||||||||
| বে-সরকারী গোডাউন = ৩২ টি। |
| ||||||||
|
|
|
| |||||||
সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলস্ লি:সাতক্ষীরা |
|
| ||||||||
|
|
|
| |||||||
মিলের জন্মকথা/ প্রতিষ্ঠাকাল: |
|
| ||||||||
| (ক) স্বাধীনতা পরবর্তীকালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশসরকার কর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের বেকার সমস্যা দূরীকরন ও স্ব-নির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে দেশের অনুন্নত এলাকায় কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির বিভিন্ন পরিকল্পনার মধ্যে বাংলাদেশ তথা বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন অঞ্চলের সন্নিকটে সুন্দরবনের নামের সাথে সামঞ্জস্যরেখে সাতক্ষীরা জেলায় সুন্দরবন টেক্সটাইল মিল স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন । উল্লেখিত পরিকল্পনা বাস্তবরুপ দানের লক্ষ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তত্কালীন বস্ত্রমন্ত্রী প্রয়াত এম, মনসুর আলীর ১৯৮০ সালের ১ জুনে ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন এবং এরমাধ্যমে মিলটির যাত্রা শুরু হয়। |
| ||||||||
| (খ) চীন দেশ হতে আমদানীকৃত ২৪,৯৬০টি টাকু বিশিষ্ট স্পিনিং/সুতা উত্পাদন ইউনিটের ২৬০টি তাঁত বিশিষ্ট কাপড়ের ইউনিটের মেশিনারিজ স্থাপনের কাজ শেষে ১৯৮৩ সনের ৬ই অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে বাণিজ্যিক উত্পাদন শুরুর মাধ্যমে মিলটির উত্পাদনের পথ যাত্রা শুরু। | |||||||||
| (গ) মিলটি স্থাপনা কাজের সময় উত্পাদন কার্যক্রম শুরু থেকে বন্ধ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত অত্র এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় ১৫০০-১৭০০ জন বেকার নারী-পুরুষ শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তা নিয়োজিতের মাধ্যমে সরকারের বেকার সমস্যা দূরীকরণএবংদেশের সুতা ও বস্ত্র চাহিদা মিটানোর লক্ষ্য অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছিল। |
| ||||||||
| (ঘ) সদ্য স্থাপিত মিলটিরগুণগত মানের উত্পাদিত সুতা বিক্রয়ের মাধ্যমে সুতা উত্পাদন ইউনিটটি মুনাফা করতে সক্ষম হলেও কাপড়ের ইউনিটটিতে লোকসান হতে থাকে।ক্রমাগত লোকসানের কারণে লোকসান পরিহারের লক্ষ্যে সরকারি সিদ্ধান্তমতে কাপড়েরইউনিটটি বন্ধ করে দিয়ে তদস্থলে ১৯৯৫ ইং সনে নীলকমল ইউনিট নামে চীন দেশ হতে আমদানীর মাধ্যমে ১৪৪০০টি টাকু বিশিষ্ট সুতা তৈরীর মেশিনারিজ স্থাপন করে সুতা উত্পাদন হতে থাকে। |
| ||||||||
|
|
|
| |||||||
| সন | মূল ইউনিট (তাঁত ইউনিটসহ) | নীলকমল ইউনিট | |||||||
|
| লাভ | লোকসান | লাভ | লোকসান | |||||
| ১৯৮৩-৮৪ | ২৫.১০ | - | - | - | |||||
| ১৯৮৪-৮৫ | ২০২.১৯ | - | - | - | |||||
| ১৯৮৫-৮৬ | ২৭৮.১৮ | - | - | - | |||||
| ১৯৮৬-৮৭ | ৩৫৪.০০ | - | - | - | |||||
| ১৯৮৭-৮৮ | ২৮৭.০০ | - | - | - | |||||
| ১৯৮৮-৮৯ | ৫৩২.১৩ | - | - | - | |||||
| ১৯৮৯-৯০ | ৩২৯.৮৪ | - | - | - | |||||
| ১৯৯০-৯১ | ২২৮.৭৪ | - | - | - | |||||
| ১৯৯১-৯২ | ২০৮.৪১ | - | - | - | |||||
| ১৯৯২-৯৩ | ৪.৬৮ | - | - | - | |||||
| ১৯৯৩-৯৪ | - | ৩৪৯.৪৭ | - | - | |||||
| ১৯৯৪-৯৫ | - | ১৪৯.৮৩ | - | - | |||||
| ১৯৯৫-৯৬ | - | ৩৩৫.৫৬ | - | ১৯৮.৬৫ | |||||
| ১৯৯৬-৯৭ | - | ৫৪৪.১০ | - | ১৬৩.০২ | |||||
|
|
|
|
|
| |||||
|
|
|
|
|
| |||||
শিল্প সংক্রান্ত তথ্য |
|
|
|
| ||||||
| বৃহৎশিল্প | ১ |
|
|
| |||||
| ক্ষুদ্র শিল্প | ১৬২৮ |
|
|
| |||||
| কুটির শিল্প (৩১ ডিসেম্বর ২০০৯ পর্যন্ত) | ১৫৮৭৬ |
|
|
| |||||
|
|
|
|
|
| |||||
বিসিক শিল্প নগরী |
|
|
|
| ||||||
| বিসিক প্রতিষ্ঠার তারিখঃ |
|
|
|
| |||||
| তদানিন্তন শিল্প মন্ত্রী স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের হাতে ১৯৫৭ ইং সালে পার্লামেন্টের এ্যাক্ট অনুসারে বর্তমানের বিসিক (BSCIC)ইপসিক (EPSIC) নামে প্রতিষ্ঠা লাভ করে । স্বাধীনতাত্তর এটি বিসিক ( Bangladesh Small & Cottage Industries Corporation ) নামে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। সাতক্ষীরা জেলায় বিসিকের কার্যালয় স্থাপন করা হয় মার্চ ‘ ১৯৮৭ ইং সালে। প্রতিষ্ঠানের সংক্ষিপ্ত বিবরনঃ- দেশে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের বিকাশ ও সম্প্রসারনের লক্ষ্যে বিসিক দীর্ঘকাল ধরেই শিল্প খাতের উদ্যোক্তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন ও সম্প্রসারন মুলক সেবা সহায়তাদি প্রদান করে আসছে। বিসিকের অভিজ্ঞতায় বলা যায় যে,পুজি ,প্রযুক্তি , অভিজ্ঞতাই শিল্প স্থাপনের প্রধান চাবিকাটি । আর এ লক্ষ্যে সমগ্র দেশে প্রতিটি জেলা শহরে প্রতিষ্টিত হয়েছে শিল্প সহায়খ কেন্দ্র , দেশে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উন্নয়ন সহ মানব সম্পদ উন্নয়ন ও আত্ন-কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বিসিক তাৎপর্যপূর্ন ভূমিকা রাখছে। |
| ||||||||
| বিসিক সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য |
|
| |||||||
|
|
|
| |||||||
| বিসিক , শিল্প নগরীতে স্থাপিত শিল্প প্রতিষ্টানের বিবরন |
| ||||||||
| ক্রমিক নং | শিল্প প্রতিষ্টানের নাম ও ঠিকানা | খাত / উপখাত | উৎপাদিত পন্য | ||||||
| ০১। | মেসার্স চিংড়ী বাংলা লিমিটেড প্রোঃ - বশির আহমেদ ০১৭১১৩৫৪৬৮৮ | হ্যাচারী এন্ড নার্সারী | চিংড়ী পোনা | ||||||
| ০২। | মেসার্স বিসমিলস্নাহ হ্যাচারী প্রোঃ- মোঃ সিরাজুল ইসলাম ০১৭১১২৯৯৬২০ | ঐ | ঐ | ||||||
| ০৩। | ’’ ইউনাইটেড হ্যাচারী প্রোঃ- মোঃ মনিরম্নজ্জামান | ঐ | ঐ | ||||||
| ০৪। | মেসার্স এ্যাকুয়া টেক হ্যাচারী প্রোঃ- মজিবর রহমান ০১৮১৯৭২৫৭৪৯ | ঐ | ঐ | ||||||
| ০৫। | মেসার্স সোনারগাও হ্যাচারী প্রোঃ- রম্নহুল আমিন ০১৭২৬২৫৮৯৭৭ | ঐ | ঐ | ||||||
| ০৬। | মেসার্স চিশতিয়া হ্যাচারী প্রোঃ- মোঃ আবুল হোসেন | ঐ | ঐ | ||||||
| ০৮। | মেসার্স বন্ধু হ্যাচারী প্রোঃ- মোঃ সাকাওয়াত হোসেন ০১৮১৬২৫০৫৪৬ | ঐ | ঐ | ||||||
| ০৯। | ’’ আবদুলস্ন্যাহ ফুড প্রডাক্টস প্রোঃ- এরশাদ আলী ০১৭২০৫৪৮৯৯৬ | খাদ্যজাত বেকারী ও কনফেকশনারী | বেকারী প্রডাক্টস | ||||||
| ১০। | ’’ মিল্ক ভিটা লিমিটেড | দুগ্ধ শিতলীকরন | দুগ্ধ সংক্ষন | ||||||
| ১১। | মেসার্স মোসত্মফা অগ্রানিক ব্যঃ পঃ- মোঃ কফিল উদ্দিন ০১৭১১৬৫১৯০০ | চিংড়ী প্রক্রিয়াজাত করন | ফিস ফ্রিজিং ও কুক ফিস | ||||||
| ১২। | ’’ সুন্দর বন ফুড প্রডাক্টস | খাদ্যজাত
| মুড়ি | ||||||
| ১৩। | বাংলাদেশ ফিস ফিড প্রোঃ - মোঃ আব্দুল মান্নণান ০১৭১৮২০৬৪৩৪ | খাদ্যজাত ফিস মিল | মাছের খাদ্য | ||||||
| ১৪। | ’’ দীপা আইস পস্নান্ট প্রোঃ- দিনু বন্ধু মিত্র | খাদ্যজাত | বরফ ক্যান | ||||||
| ১৫। | ’’ মামুন ওয়েষ্ট কটন প্রোঃ- আব্দুল মজিদ | বস্ত্রজাত | কটন | ||||||
| ১৬। | ’’ ইসামতি সল্ট ইন্ডাষ্ট্রীজ ব্যঃ পঃ- মোঃ নাসিম ফারম্নখ খান | খাদ্যজাত | আয়োডিন লবন | ||||||
| ১৭। | ’’ রনি এ্যাগ্র এন্ড ইনকিউবেটর প্রোঃ- জি,এম,নূরম্নল ইসলাম ০১৭১১৩৭৫২৭৮ | ইজ্ঞিনিয়ারিং | ডিম ফোটানো মেমিন | ||||||
| ১৮। | ’’ পাওয়ার ড্রিষ্ট্রিবিউশান লিঃ প্রোঃ- মোঃ- শহিদুজ্জামান ০১৭১২৭৮৫৭৫০ | ক্যামিক্যাল | ব্যাটারী | ||||||
| ১৯। | ’’ গৃহিনী ফুড প্রডাক্টস প্রোঃ- মোঃ এনামুল হক | খাদ্যজাত | মসলা | ||||||
| ২০। | ’’ পাইয়োনিয়ার এ্যাকুয়া কালচার প্রোঃ- নিজাম উদ্দিন সেলিম | হ্যাচারী এন্ড নার্সারী | চিংড়ী পোনা | ||||||
| ২১। | ’’ সুফলা গলদা হ্যাচারী প্রোঃ- মোঃ কওছার গাজী ০১৭১০৬২২৪৫৬ |
|
|
|
|
|
| ||
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS